বাংলাদেশ জ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র (BDKRC)

উস্তাদ জাভেদ আহমদ গামিদী

ইমাম ইসলাহী (রহ.) যখন ইমাম ফারাহী (রহ.)-এর নিকট পড়াশোনা করতে এসেছিলেন, তখন তার বয়স ছিল: ২২ (বাইশ); আশ্চর্যজনকভাবে ঠিক ২২ বছর বয়সেই উস্তাদ জাভেদ আহমদ গামিদী গিয়েছিলেন জ্ঞানের তৃষ্ণা মেটাতে ইমাম ইসলাহী (রহ.)-এর দুয়ারে আর সে সময় ইমাম ইসলাহী (রহ.)-এর বয়স ছিল: ৭০ (সত্তর)। ইমামও এমন নিষ্ঠাবান ছাত্রকে পেয়ে প্রতিজ্ঞা করান, “অঙ্গীকার করো, তুমি কখনই সত্যকে পরিত্যাগ করবে না, এমনকি তোমার ছায়া তোমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলেও।”

উস্তাদ জাভেদ আহমাদ গামিদী সাহেব ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাবের সাহিওয়ালে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার ছিল আগোগোড়া সুফিবাদের সাথে সম্পৃক্ত।

উস্তাদ গামিদী গ্রামের স্কুল থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন এবং পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি আরবী ও ফারসি ভাষা অধ্যয়ন করেন। উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় মাওলানা আবুল আলা মওদুদী (রহ.)-এর কাজের সাথে তার পরিচয় ঘটে। ইসলামী বিপ্লবের যে ডাক মাওলানা দিয়েছিলেন তিনি সেটাতে সাড়া দেন এবং গড়ে তোলেন সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী (রহ.)-এর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। মাওলানার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি তার সাথে ছিলেন। পরবর্তীতে উস্তাদ গামিদী জামায়েত ইসলাম থেকে সরে আসেন।

স্নাতকে অধ্যয়ন করার সময় তিনি লাহোরের প্রখ্যাত আলেমদের অধীনে আরবি ও ইসলাম সম্পর্কে অধ্যয়নে নিমগ্ন ছিলেন, আর এ সময়ই তার সাথে পরিচয় ঘটে ইমাম ইসলাহী’র। আর এখান থেকেই সূচনা ঘটে নয়া জামানার, নয়া জোয়ারের।

উস্তাদ গামিদী সামনে এগিয়ে নেন ইমাম ফারাহী (রহ.) ও ইমাম ইসলাহী (রহ.)-এর কাজের ধারাকে। কুরআনের নজম তত্ত্বসহ কুরআন অধ্যয়ন, সুন্নাতের সঠিক সংজ্ঞায়ন, হাদীসের উপযুক্ত অবস্থান ও অধ্যয়নের নিয়মসহ গোটা ইসলাম নিয়ে তিনি তার খিদমত অতুলনীয়।

তার রচিত গ্রন্থ:

(১) মীযান [দ্বীন ইসলামের সামগ্রিক বয়ান]

(২) আল-বায়ান [কুরআনের তাফসীর]

(৩) বুরহান [বিভিন্ন প্রবন্ধ সংকলন]

(৪) মাকামাত [বিভিন্ন প্রবন্ধ সংকলন]

(৫) খাওয়ালে-খামা [কাব্যগ্রন্থ]

১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে উস্তাদ গামিদী সাহেব ‘আল-মাওরিদ’ নামে একটি ইসলামি গবেষণা ও অধ্যয়নকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তিনি এই প্রতিষ্ঠান ও তার সুযোগ্য ছাত্র ও সহযোগীদের মাধ্যমে ইসলামের প্রচার-প্রসার, শিক্ষা দেয়া, গবেষণা করার মতো কাজ করে যাচ্ছেন।

তিনি ও তার ছাত্ররা সম্প্রতি হাদীসের উপর বেশ বড় প্রকল্পে হাত দিয়েছেন, যেখানে গোটা হাদীস ভাণ্ডার নিয়ে কাজ হচ্ছে। প্রতিটি হাদীসকে তার মূল অংশের সাথে সম্পৃক্ত, সেটার প্রেক্ষাপট নির্ধারণসহ বেশ গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার কাজ চলমান।

উস্তাদ জাভেদ আহমাদ গামিদী সাহেবের বয়স ৭০ পেরিয়েছে, তাই আমরা মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি: তিনি তাকে নেক হায়াত দান করেন যেন এই ঐতিহাসিক কাজটি সুসম্পন্ন হয়।

Add New Playlist