ইমাম ইসলাহী (রহ.) ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে আজমগড়ের একটি গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
গ্রামের সরকারি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ, আরবী ও ফারসী ভাষার প্রাথমিক অধ্যয়নের পর তিনি মাদরাসাতুল ইসলাহে ভর্তি হন। মাদরাসাতুল ইসলাহে পড়াশোনার কারণে তার নামের শেষে ‘ইসলাহী’ লকব যুক্ত। ওই সময় মাদরাসাতুল ইসলাহের প্রধান ছিলেন আল্লামা শিবলী নুমানী (র.)।
১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে যুগশ্রেষ্ঠ মনীষী ইমাম হামিদুদ্দীন ফারাহী (রহ.) মাদরাসাতুল ইসলাহের দায়িত্ব নিয়ে এটাকে জ্ঞানের নতুন দিগন্ত এবং মুক্ত জ্ঞানচর্চার মজবুত কেন্দ্র বানাতে চাইলে তার সে কাজকে সামনে এগিয়ে নেয়ার মানসিকতার শিক্ষার্থী হিসেবে ইমাম ইসলাহীকে পেয়ে যান এবং তাকে তিনি তার উত্তরসূরি নির্বাচন করেন।
ইমাম ইসলাহী (রহ.)-এর লিখেছেন: “যখন আমি ইমাম ফারাহী (রহ.)-এর সাথে দেখা করার জন্য তার গ্রামের বাড়ি যাই, তখন তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি কি এখনও পত্রিকা সম্পাদনা করতে চাও না কি আমাদের সাথে কুরআন অধ্যয়ন করতে চাও?’ উত্তরে বলি, ‘আমি আপনার সেবায় আছি।” ইমাম ফারাহী (রহ.)-এর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি তার নিকট ইলম বা জ্ঞান চর্চায় নিয়েজিত ছিলেন।
এরপর জ্ঞানের জন্য তিনি বহু প্রখ্যাত পণ্ডিতের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন, যেমন: হাদীস অধ্যয়নের জন্য তিনি মাওলানা আবদুর রহমান মুবারকপুরীর কাছে গিয়েছিলেন এবং তার থেকে তিনি হাদীস ও উসূলে হাদীস সম্পর্কে জ্ঞান হাসিল করেন।
১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে জামায়াতে ইসলাম গঠিত হলে ইমাম ইসলাহী ছিলেন এর প্রতিষ্ঠা সদস্য। তিনি তার জীবনের দুই দশক জামায়াতে ইসলামের স্বার্থে উৎসর্গ করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি জামায়াতে ইসলাম থেকে বেরিয়ে আসেন এবং কুরআন অধ্যয়ন ও শিক্ষার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেন। এর ফলশ্রুতিতে তিনি ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে “তাদাব্বুরে কুরআন” নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে তা সুসম্পন্ন হয়।
ইমাম ইসলাহী (রহ.)-কে দীর্ঘ জীবন পেয়েছিলেন। তিনি ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত সুস্থ ছিলেন এবং শিক্ষকতা করে গেছেন। মৃত্যুর তিন বছর আগে তার স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে এবং ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।